মুক্তিপণের আশ্বাসে অপহৃত ১২ জেলে মুক্ত
পাথরঘাটা, ১৩ জুলাই (আমিন সোহেল/আমাদের বরিশাল ডটকম): এই প্রথমবারের মতো নগদ কোন মুক্তিপণ ছাড়াই জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে ১২ জন জেলে। সাগরে মাছ পরা দিলে মুক্তিপণ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ১৩ জুলাই সকালে জলদস্যুদের হাতে আটক ৪৭ জেলের মধ্যে ১২ জেলে একটি ট্রলারে করে পাথরঘাটায় ফিরে এসেছেন।
ফিরে আসা জেলেদের মধ্যে সাত জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, আলিম, নুর আলম, হারুন মাঝি, মোশারেফ মাঝি, ছগির মাঝি, লাল মিয়া খাঁ ও মিজান সরদার। এদের বাড়ি পাথরঘাটার হাড়িটানাসহ বিভিন্ন গ্রামে। ফিরে আসা অপহৃত জেলেদের বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী পাথরঘাটায় স্থানীয় সাংবাদিকদের ১৩ জুলাই দুপুরে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
ফিরে আসা অপহৃত জেলে লাল মিয়া খাঁ সাংবাদিকদের জানান, আমার ৩০ বছরের মাছ ধরার জীবনে এই প্রথমবারের মতো কোন টাকা পয়সা ছাড়াই জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি। তবে তাদের সাথে আমাদের একটি মৌখিক চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সাগরে মাছ পরা দিলে জনপ্রতি ৫০হাজার টাকা মুক্তিপণ বাবদ ওই বাহিনীকে পরিশোধ করতে হবে।
ফিরে আসা ওই জেলেরা আরো জানান, তাদেরকে চোখ বেঁধে সুন্দরবনের কোন এক এলাকায় একটি ট্রলারের খোন্দলে (ট্রলারের ভিতরে মাছ রাখার জায়গা) ১৮ জনকে গাদাগাদি করে রাখা হয়। ওই ১৮ জনের মধ্যে থেকে ১২ জনকে একটি ট্রলারে করে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাহিরে পৌছে দেয়। এসময় জলদস্যুদের ব্যবহৃত একটি ট্রলারে করে ওই বাহিনীর ১৮ থেকে ২০ জন সদস্য তাদের আস্তানায় ফিরে যায়। এসময় ওই বাহিনীর প্রায় প্রত্যেকের হাতে ১টি করে অস্ত্র ছিল বলে তারা জানালেও বাহিনীর নাম পরিচয় জানাতে পারেননি।
চরদুয়ানীয় ট্রলার মালিক আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, এ বছর চারটি জলদস্যু বাহিনীর চারজন নেতা র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও অপর সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে ছোট ছোট দল গঠন করে সাগরে ডাকাতি অব্যাহত রেখেছে। ১০ জুলাই রাতে সাগরে ডাকাতি শেষে ৩ ট্রলারসহ ৪৭ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করার সঙ্গে নাসির ও গামা বাহিনী জড়িত বলে তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা কোষ্টগার্ডের ষ্টেশন কমান্ডার সাব লে. হারুন অর রশিদ ১৩ জুলাই বিকেলে মুঠোফোনে জানান, তারা ট্রলার ডাকাতির খবর শোনার পর থেকেই সিজিএস নোয়াখালী নামের একটি জাহাজ সুন্দরবন সংলগ্ন ওই এলাকায় কোষ্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে অপহৃত জেলেদের সংখ্যা ১৫ থেকে ১৮ জন বলে তিনি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরের কচিখালী ও নারিকেল বাড়িয়া সংলগ্ন মধ্য চর এলাকায় ১০জুলাই রোববার রাতে মাছ ধরারত অবস্থায় জলদস্যুরা ৩২ টি ট্রলারে ডাকাতি করে ৩ ট্রলারসহ ৪৭ জেলেকে সুন্দরবন এলাকায় অপহরণ করে নিয়ে যায়।
–
(আমাদের বরিশাল ডটকম/পাথরঘাটা/আসো/তাপা)
সম্পাদনা: সেন্ট্রাল ডেস্ক |